কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যেনো আকাশও আজ কাঁদছিলো! বৃষ্টিস্নাত বিকেলে শাহনাজ কবীরের মরদেহ পৌঁছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের নন্দীগ্রামে। তিনি এ গ্রামের কৃতি সন্তান বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা উপসচিব মো. রফিকুল ইসলামের সহধর্মিনী। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর/২০২৩) বিকাল সাড়ে ৫টায় জানাযা শেষে স্বামীর ঠিকানায় চিরনিন্দ্রায় শায়িত হন দেশসেরা শিক্ষক শাহনাজ কবীর।
তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের সরয়ু বালা (এসভি) সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০১৯সনের মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হন। ওই বছরের ৫ মে তিনি দেশের সেরা শিক্ষক হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
রোববার দুপুরে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। স্বামী, দুই কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের শহিদী মসজিদ প্রাঙ্গণে। দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের নন্দীগ্রামে। দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ সমাহিত করা হয়।
তিনি ১৯৭০সালের ১৮মার্চ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার কুমড়ি-দূর্গাপুর গ্রামে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৮৬সালে মুন্সিগঞ্জের এ ভি জে এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি, আনন্দ মোহন সরকারি কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করেন। বিএড ও এম উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে যোগ দেন সরয়ু বালা (এসভি) সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। শাহনাজ কবীর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক সম্মাননা ও পুরুস্কারে ভূষিত হন।
এ দিকে সিনিয়র শিক্ষক ফেরদৌসী আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীরের সঙ্গে প্রায় সপ্তাহ আগে কথা হয়। তিনি বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায়ও সবসময় শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের জন্য কাজ করতেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা চিন্তা করতেন। অসুস্থ হয়েও তিনি নিজের বিষয়ে তেমন কথাবার্তা বলেননি। তবে শুধু বিদ্যালয়ের খোঁজখবর নিয়েছেন। উনার চিন্তা-চেতনায় সবসময় বিদ্যালয় ছিলো। তিনি আরও বলেন. বড় আপা (প্রধান শিক্ষক) গত জুন মাসের ২২তারিখ ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর জন্য ভারতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার আগের দিন ২১জুনও বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। সবকিছু দেখে গেছেন।